বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি-
একদল মানুষ খুব জোর গলায় উক্ত দাবী করে থাকে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে যদি তাদের মধ্যে ঈমান থাকতো তবে প্রমাণ স্বরূপ তারা ছালাত আদায় করতো। কেননা ঈমানের পরিচয়ই হল ছালাতে। যে ব্যক্তি এই ছালাত পরিত্যাগ করবে তার ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহ্তে ভয়াবহ পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ্ বলেন,
(فَإنْ تاَبُوْا وَأقاَمُوا الصَّلاَةَ وآتَوا الزَّكاَةَ فَإخْواَنُكُم فِيْ الدِّيْنِ) “যদি তারা তওবা করে এবং ছালাত আদায় করে ও যাকাত প্রদান করে তবে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই।” (সূরা তওবা- ১১)
আল্লাহ্ আরো বলেন,
(ماَ سَلَقَكُمْ فِيْ سَقَرٍ، قاَلُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّيْنَ) “তোমাদেরকে কিসে সাক্বারে (জাহান্নামে) নিক্ষেপ করল? তারা বলবে, আমরা ছালাত আদায় করতাম না।” (সূরা মুদ্দাছ্ছির- ৪২)
নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন,
(بَيْنَ الرَّجُلِ والْكُفْرِ والشِّرْكِ تَرْكُ الصَّلاَةِ) “মুসলিম বান্দা এবং কাফের ও মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য হল ছালাত পরিত্যাগ করা।” (মুসলিম)
তিনি আরো বলেন,
(الْعَهْدُ الَّذِيْ بّيْنَناَ وَبَيْنَهُمْ الصّلاَةُ فَمَنْ تَرِكَهاَ فَقَدْ كَفَرَ) “তাদের মাঝে এবং আমাদের মাঝে চুক্তি হচ্ছে ছালাতের, যে ব্যক্তি ছালাত পরিত্যাগ করবে সে কাফের হয়ে যাবে।” (আহমাদ, আবূ দাঊদ)
# প্রখ্যাত ছাহাবী আবদুল্লাহ্ বিন শাক্বীক্ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)এর ছাহাবীগণ ছালাত ব্যতীত কোন আমল পরিত্যাগ করার কারণে কাউকে কাফের মনে করতেন না।” (তিরমিযী) অর্থাৎ- কোন ব্যক্তি ছালাত ছেড়ে দিলে ছাহাবীগণ মনে করতেন সে কাফের হয়ে গেছে।
# বিদ্যানদের অনেকেই ছালাত পরিত্যাগকারী কাফের হওয়ার ব্যাপারে ছাহাবায়ে কেরামের এজমা (ঐকমত্য) বর্ণনা করেছেন। তাঁদের মধ্যে ওমর বিন খাত্তাব, আবদুর রহমান বিন আউফ, মু‘আয বিন জাবাল, আবু হুরায়রা, আবদুল্লাহ্ বিন মাসঊদ, আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস, জাবির বিন আবদুল্লাহ্, আবু দারদা প্রমূখ উল্লেখযোগ্য। (মুহাল্লা ইবনু হাযম সূত্র: নামায ত্যাগকারীর বিধান, ইবনু ঊছাইমীন পৃ:১৮)
# ওমর বিন খাত্তাব (রা:) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ছালাত পরিত্যাগ করে ইসলামে তার কোন অংশ নেই।’ (মুআত্বা মালেক) অর্থাৎ- সে ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে। ইমাম ইসহাক বিন রাহ্ওয়াই বলেন, নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নামায ত্যাগকারীর ব্যাপারে বিশুদ্ধ সূত্রে যেগুলো হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তাতে প্রমাণ হয় যে সে কাফের। আর এটাই হচ্ছে নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগ থেকে আজ পর্যন্ত আলেমগণের মত যে, ইচ্ছাকৃতভাবে বিনা কারণে নামাযের সময় অতিক্রম করে নামায ত্যাগকারী কাফের। (নামায ত্যাগকারীর বিধান, ইবনু ঊছাইমীন পৃ:১৮)
# ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) বেনামাযীর কাফের হওয়ার ব্যাপারে দশটি দিক উল্লেখ করেছেন। (শারহুল উমদাহ্, ইবনু তাইমিয়া২/ ৮১-৯৪) ইমাম ইবনুল ক্বাইয়েম (রঃ) বেনামাযী কাফের হওয়ার ব্যাপারে ২০টি দলীল উল্লেখ করেছেন। (কিতাবুছ্ ছালাত ১৭-২৬ পৃঃ)
# ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) বেনামাযীর কাফের হওয়ার ব্যাপারে দশটি দিক উল্লেখ করেছেন। (শারহুল উমদাহ্, ইবনু তাইমিয়া২/ ৮১-৯৪) ইমাম ইবনুল ক্বাইয়েম (রঃ) বেনামাযী কাফের হওয়ার ব্যাপারে ২০টি দলীল উল্লেখ করেছেন। (কিতাবুছ্ ছালাত ১৭-২৬ পৃঃ)
উৎস: আমি কি ছালাত আদায় করি?
লেখক: শাইখ আব্দুল্লাহ আল কাফী বিন আব্দুল জলীল
সম্পাদনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন