শনিবার, ১৬ জুন, ২০১৮

ঝাড়-ফুঁকের হুকুম কি?

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি-

ঝাড়-ফুঁকের হুকুম কি? কুরআনের আয়াত লিখে গলায় ঝুলিয়ে রাখার হুকুম কি?




যাদু বা অন্য কোন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঝাড়-ফুঁক করাতে কোন অসুবিধা নেই। যদি তা কুরআনের আয়াত বা অন্য কোন বৈধ দু’আর মাধ্যমে হয়ে থাকে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত আছে যে, তিনি সাহাবীদেরকে ঝাড়-ফুঁক করেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ঝাড়-ফুঁকের বিভিন্ন দু’আও প্রমাণিত আছে। তম্মধ্যে কয়েকটি দু’আ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ

رَبَّنَا اللَّهُ الَّذِي فِي السَّمَاءِ تَقَدَّسَ اسْمُكَ أَمْرُكَ فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ كَمَا رَحْمَتُكَ فِي السَّمَاءِ فَاجْعَلْ رَحْمَتَكَ فِي الْأَرْضِ اغْفِرْ لَنَا حُوبَنَا وَخَطَايَانَا أَنْتَ رَبُّ الطَّيِّبِينَ أَنْزِلْ رَحْمَةً مِنْ رَحْمَتِكَ وَشِفَاءً مِنْ شِفَائِكَ عَلَى هَذَا الْوَجَعِ فَيَبْرَأَ

“হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার নাম অতি পবিত্র। আকাশ এবং যমিনে আপনার আদেশ বাস্তবায়িত হয়। আকাশে যেমন আপনার রহমত বিস্তৃত রয়েছে, জমিনেও অনুরূপভাবে আপনার রহমত বিস্তার করুন। আপনি আমাদের গুনাহ ও অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন। আপনি পবিত্রদের প্রভু, এই রোগীর উপর আপনার রহমত ও শিফা অবতীর্ণ করুন। এই ভাবে ঝাড়-ফুঁক করলে রোগী সুস্থ হয়ে উঠত।”

بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ

“আল্লাহর নামে তোমাকে ঝাড়-ফুঁক করছি। প্রতিটি এমন রোগ আরোগ্যের জন্যে, যা তোমাকে কষ্ট দেয়। প্রতিটি মানুষের অকল্যাণ থেকে এবং হিংসুকের বদ নজর থেকে আল্লাহ তোমাকে শিফা দান করুন। আল্লাহর নামে তোমাকে ঝাড়-ফুঁক করছি।”

أَعُوذُ بِاللَّهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ

আমি আল্লাহ এবং তাঁর কুদরতের উসীলায় আমার কাছে উপস্থিত ও আশংকিতকারী অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। রোগী ব্যক্তি শরীরের যেখানে ব্যথা অনুভব করবে, সেখানে হাত রেখে উপরোক্ত দু’আটি পাঠ করবে। উপরের দু’আগুলো ছাড়াও হাদীছে আরো অনেক দু’আ বর্ণিত হয়েছে।

কুরআনের আয়াত অথবা হাদীছে বর্ণিত দু’আ বা যিক্‌র লিখে গলায় ঝুলিয়ে রাখার ব্যাপারে আলোমেগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেছেন বৈধ। আবার কেউ বলেছেন অবৈধ। তবে অবৈধ হওয়াটাই সত্যের অধিক নিকটবর্তী। কারণ এসব ঝুলিয়ে রাখার পক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়না। এটাই সর্বাধিক সঠিক কথা; বরং একাজটি একটি শিরকী কাজ বলে গণ্য হবে। কারণ এখানে এমন জিনিষকে মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে আল্লাহ যাকে শরীয়ত সম্মত মাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দেন নি। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কোন দলীল পাওয়া যায়না। কুরআন বা অন্য দু’আ পড়ে রোগীর শরীরে ফুঁক দেয়ার কথা হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু রোগীর গলায় বা হাতে কুরআনের আয়াত লিখে ঝুলিয়ে রাখা কিংবা কুরআনের আয়াত লিখে বালিশের নীচে রেখে দেয়া সম্পূর্ণ নিষেধ।

লেখক/সংকলক/অনুবাদকঃ শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Whatsapp Button works on Mobile Device only

Start typing and press Enter to search