মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৮

“ফি আমানিল্লাহ” — ইসলামে এর ভিত্তি কি?

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি-


কাউকে বিদায় দিতে সচারাচর আমরা ‘ফি আমানিল্লাহ’ শব্দটি ব্যাবহার কারে থাকি। বিদায় দেয়ার দোয়া হিসেবে আমরা শব্দটিকে নির্ধারন করেছি। কিন্তু দ্বীনের মানদন্ডে এর ভিক্তি কতটুকু তা কি কখনো ভেবে দেখেছি?

‘ফি আমানিল্লাহ’ {في أمان الله} আরবী শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে- ‘আল্লাহ নিরাপত্তা দিন’ বা ‘আল্লাহর নিরাপত্তায়’। শাব্দিক ভাবে এতে কোন সমস্যা নেই। বরং অবশ্যই আমরা সর্বক্ষেত্রে মহান আল্লাহর কাছেই নিরাপত্তা কামনা করি। কিন্তু যখন কোন বিষয়ে সুস্পষ্ট সুন্নাহ পাওয়া যাবে তখনও কি আমরা মানুষের বানানো দোয়াকেই মানব? মনে রাখবেন, কোন আমল করতে হলে অবশ্যই তা কুরআন বা হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হতে হবে। নতুবা তা পরিত্যাজ্য বলে গন্য হবে, কেননা কুরআন-হাদীসের বাইরে মানুষের বানানো হাতুড়ে আমলই হল বিদ’আত।

আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেন,

“যে ব্যক্তি এমন আমল করবে যার ব্যাপারে আমার শরীতের নির্দেশনা নেই, উহা প্রত্যাখ্যাত।” [সহীহ মুসলিম-৩২৪৩]

 রাসূল ﷺ আরো বলেন,

“নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম কথা হচ্ছে আল্লাহ্‌র কিতাব, সর্বোত্তম পদ্ধতি হচ্ছে রাসুলুল্লাহ ﷺ এর পদ্ধতি। আর নিকৃষ্ট কাজ হচ্ছে শরীয়াতে নতুন কিছু সৃষ্টি করা, এবং প্রত্যেক বিদ'আত হচ্ছে ভ্রষ্টতা।” [সহীহ মুসলিম-৭৬৮]

 তিনি আরো বলেছেন,

 “যে আমার সুন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে সে আমার দলভুক্ত নয়।” [সহীহ বুখারী-৫০৬৩]

আল্লাহর রাসূল ﷺ হতে বিদায়ের দোয়া সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আমরা যদি প্রকৃত পক্ষেই আল্লাহর নিরাপত্তা ও রহমত কামনা করি সেক্ষেত্রে কি রাসূলের শিখানো দোয়ার মরতবা বেশী হবে না? আল্লাহর রাসূল ﷺ কাউকে বিদায় দেয়ার সময় বলতেন—

{أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ دِينَكَ وَأَمَانَتَكَ وَآخِرَ عَمَلِكَ}

“আস্তাউদি’উল্লা-হা দ্বীনাকা, ওয়া আমা-নাতাকা, ওয়া খাওয়া তীমা আ’মালীকা।” সহীহাহ হাঃ ১৬, ২৪৮৫, সূনান আত তিরমিজী, অধ্যায়: ৪৫/ দু"আসমূহ, হাদিস নম্বরঃ ৩৪৪২, মান: সহীহ]

যার অর্থ হলোঃ “তোমার দ্বীন, ঈমান ও সর্বশেষ আমালের ব্যাপারে আমি আল্লাহ তা'আলাকে আমানতদার নিযুক্ত করলাম।”


আসুন দ্বীনি ভাই-বোনেরা, আমরা আল্লাহর রাসূলের ﷺ শেখানো পদ্ধতিতে প্রিয়জনকে বিদায় দেই। তাতে করে একটি মৃত সুন্নাহ উজ্জীবিত হবে এবং আল্লাহর তরফ হতেও মিলবে নিরাপত্তা, রহমত ও সফলতা। আল্লাহর রাসূল ﷺ আরো বলেন—

“যে আমার সুন্নাতকে যিন্দা করে সে আমাকে ভালবাসে। আর যে আমাকে ভালবাসে সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।” [সুনানে তিরমিযী, ২৬৭৮]

মহান আল্লাহ ﷻ পবিত্র কুরআনুল কারীমায় এরশাদ করেন—

“তোমাদের জন্য রাসূলের ﷺ জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।” [সূরা: আল আহযাব, আয়াত: ২১]

আল্লাহ-ই সবচেয়ে ভাল জানেন।

৬টি মন্তব্য:

Whatsapp Button works on Mobile Device only

Start typing and press Enter to search